KAURIBURIR MANDIR AVIK SARKAR BENGALI BOOK REVIEW

"ভালবাসাই হল সবচেয়ে বড় তন্ত্র, সবচেয়ে বড় জাদু"
   বলেন বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ। কিন্তু ভালবাসা কি এবার ভবতারন চট্টোপাধ্যায় কে এক শতাব্দী প্রাচীন ভয়ঙ্কর অভিশাপ থেকে বাচাতে পারবে? যে অভিশাপের মূল লুকিয়ে আছে আসামের গভীর জঙ্গলের এক অদ্ভুত পরিত্যক্ত মন্দিরে, KAURIBURIR MONDIR এ।অতীতে একটা গোটা জনজাতিকে এক রাতের মধ্যে নিশ্চিহ্ণ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখা সেই অভিশাপ জেগে উঠেছে কারো আদিম যৌন লিপ্সায়। সেই অভিশাপের চক্রব্যূহ ভেদ করতে কি আমাদের গল্পের কথক সমর্থ হবেন? নাকি ঐ অভিশাপের বলি হবে একের পর এক নিরপরাধ প্রাণ? পড়ুন তর্কসাপেক্ষে বর্তমানের শ্রেষ্ঠ তন্ত্র আধারিত THRILLER লেখক AVIK SARKAR এর KAURI BURIR MANDIR এর পাঠপ্রতিক্রিয়া BOOKS REVIEWS BLOG এ। 

    বইয়ের নাম- KAURIBURIR MANDIR/ কাউরীবুড়ির মন্দির
    
    লেখক- AVIK SARKAR/ অভীক সরকার


    প্রধান চরিত্রে- ভবতারন চট্টোপাধ্যায়, মাধুরী, পরাগ, দিভাই, কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ প্রমুখ 

    KAURI BURIR MANDIR AVIK SARKAR BOOK ONLINE BUY AMAZON LINK-
 

KAURIBURIR MANDIR AVIK SARKAR BOOK SUMMARY/ কাউরীবুড়ির মন্দির অভীক সরকার কাহিনী সংক্ষেপ


    এক বর্ষণমুখর সন্ধায় পাড়ার ক্লাবে বসে নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া সব থেকে ভয়াবহ ঘটনার গল্প বলা শুরু করলেন ভবতারন চট্টোপাধ্যায়। Forest Department এর চাকুরীজীবী এবং তন্ত্রবিদ্যা ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উৎসাহী ভবতারন বাবু এক দুষ্প্রাপ্য ভেষজের সন্ধানে একবার আসাম যান। সেখানে তার পরিচয় হয় মাধুরীর সাথে। পিতা মাতা হীন অনির্বাণের সাথে কিছুদিন আগেই মাধুরীর  বিয়ে হয়েছিল। স্বামী ছাড়া মাধুরীর শ্বশুর বাড়ির একমাত্র সদস্যা ছিলেন অনির্বাণের বিধবা দিদি। কিন্তু মাধুরী শ্বশুর বাড়িতে এমন কিছু পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় যার যেরে বিয়ের কিছুদিন পরেই অনির্বাণের সাথে সব সম্পর্কের ইতি টেনে স্থায়ী ভাবে সে বাপের বাড়ি এসে থাকতে শুরু করে। কিন্তু কি কারনে সে এইভাবে শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে চলে আসে তা কাউকে বলেনা।

     এদিকে সেই দুষ্প্রাপ্য ভেষজ 'গোলক পুষ্পের' সন্ধানে বেরিয়ে ভবতারন বাবু  পৌঁছে যান সেখানের জঙ্গলের গভীরে এক অদ্ভুত পরিত্যক্ত মন্দিরে, KAURIBURIR MONDIR এ।  সেখানে কিছু অলৌকিক ঘটনা এবং মন্দিরের অদ্ভুত প্রহরীদের প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি তার পরিচয় হয় মন্দিরের বড়দেওরি বা প্রধান মহিলা পুরহিতের সাথে।বড়দেওরির কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন যে কাউরীবুড়ির মন্দির এ বড়দেওরি ছাড়া অন্য কারোর প্রবেশ একদম নিষেধ এবং ভুল করেও যেন ভবতারন বাবু সেখানে দ্বিতীয়বার আসার চেষ্টা না করেন।  KAURI BURIR MONDIR এর একমাত্র আরাধ্য দেবী কাউরীবুড়ির বিচিত্র পূজা সম্পন্ন করে বড়দেওরি, ভবতারন বাবুকে জঙ্গলের বাইরে ছেড়ে আসেন। 

     ভবতারন বাবু এরপর এক স্থানীয় যুবক পরাগের কাছ থেকে KAURIBURIR MANDIR এবং সেখানের জনজাতির কিছুটা ইতিহাস জানতে পারেন। কিভাবে একটা শতাব্দী প্রাচীন অভিশাপ এক রাতের মধ্যে একটা গোটা জনজাতি কে নিশ্চিহ্ণ  করে দিয়েছিল সেটাও জানতে পারেন। মাধুরীও তার শ্বশুরবাড়ি ঘটে যাওয়া কিছু অস্বাভাবিক ঘটনার কথা, যার জন্য সে বাপের বাড়ি এসে থাকতে বাধ্য হয়েছে, ভবতারন বাবুকে জানায়।এদিকে ভবতারন বাবু লক্ষ্য করেন তিনি যেদিন থেকে কাউরীবুড়ির মন্দির থেকে ফিরেছেন, একটা সাদা ছায়ামূর্তি আড়ালে থেকে তার অপর নজর রাখছে। মাঝে মধ্যেই তিনি ভেজা কাঠের পোঁড়া গন্ধ পাচ্ছেন। সব থেকে উদ্বেগজনক জিনিস হল রোদে তার যে ছায়া টা পড়ছে সেটা মুণ্ডুহীন। এই অবস্থায় হতবুদ্ধি হয়ে ভবতারন বাবু স্মরনাপন্ন হন তার পাতানো কাকা স্বনামনধন্য তন্ত্রসাধক কৃষ্ণানন্দ ভট্টাচার্য মৈত্রের, আগম মতে তন্ত্র সাধনার জন্য লোকে যাকে কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ বলে ডাকে।

    ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে কালবিলম্ব না করে সেখানে হাজির হন আগমবাগীশ মহাশয়। তিনি উপলব্ধি করেন দুটো পৃথক রহস্য সেখানে সমান্তরালে চলছে। প্রথমটা মাধুরীকে নিয়ে ঘটে যাওয়া একের পর এক অলৌকিক ঘটনা আর দ্বিতীয়টা ওই রহস্যজনক মন্দির ও তার দেবীর অভিশাপের  স্বরুপ। তবে খুব তাড়াতাড়ি এর জট না খুলতে পারলে ঘটবে সমূহ বিপদ এবং কারো অবধারিত মৃত্যু। বিভিন্ন জটিল তান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন করে এবং এক স্থানীয় প্রৌঢ়ের থেকে সেখানকার উপজাতিদের ইতিহাস জেনে আর মাধুরীর স্বামীর জবানবন্দি শুনে ভবতারন বাবুরা উপলব্ধি করেন সমস্ত জট লুকিয়ে আছে KAURI BURIR MANDIR এ। 

    এই ভয়ঙ্কর বিপদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ একটাই, এক জটিল তন্ত্র সাধনা, যা সমাধা করতে হবে পরের দিন অমবস্যার রাতে কাউরীবুড়ির মন্দির এ, কিন্তু সেই জটিল তান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যদি বিন্দু মাত্রও ভুল  হয়, তাহলে ঘটবে চরম অনর্থ। কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ এর পৌরোহিত্যে মাধুরীরা কি পারবে সেই অমোঘ বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেতে? নাকি অতীতের মতই কাউরীবুড়ির অভিশাপ গ্রাস করবে নিরীহ প্রানগুলোকে? জানতে হলে অবশ্যই পড়ুন AVIK SARKAR এর আগমবাগীশ series এর নতুন তন্ত্র আধারিত thriller KAURIBURIR MANDIR।

KAURIBURIR MANDIR AVIK SARKAR BOOK REVIEW/ কাউরীবুড়ির মন্দির অভীক সরকার পাঠপ্রতিক্রিয়া

    প্রথমেই বলে রাখি AVIK SARKAR এর KAURIBURIR MANDIR একটি সম্পূর্ণ  প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লেখা উপন্যাস। অজাচার যৌনতার (incest relationship) কথা এই গল্পে আছে।

    বইটার নামকরন কাউরীবুড়ির মন্দির আমার মতে সার্থক। কারন 'কাউরী' দের 'বুড়ি' অর্থাৎ দেবীর মন্দির নিয়েই গল্পের শুরু ও ইতি। এখন এই 'কাউরী' কারা এটা জানতে হলে অবশ্যই আপনাদের বইটা পড়তে হবে।

    বইটার প্রচ্ছদ দেখেই বোঝা যায় অভীক সরকার এখানে একটা বেশ dark theme introduce করতে চেয়েছেন। প্রচ্ছদের জরাজীর্ণ মন্দিরটি বলাই বাহুল্য KAURI BURIR MONDIR আর তাকে ঘিরে যে দাঁড় কাকের ছবিটা এখানে সব থেকে প্রকট পুরো গল্পে তার একটা বেশ বড় ভূমিকা আছে। তাই কাহিনীর সাথে প্রচ্ছদটি বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ।

  এবার আসা যাক মূল গল্পের বিষয়ে। AVIK SARKAR এখানে একদম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বা তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এর ঘরানায় গল্পটি শুরু করেছেন, যেখানে কথক তার জীবনে ঘটে যাওয়া বিশেষ ঘটনার স্মৃতিচারণা করছেন। বইটি একটি তন্ত্র আধারিত thriller। শুরু থেকেই টানটান উত্তেজনা আর ভয়ের পরিবেশ তৈরীতে লেখক এখাণে সফল। দুটি আপাত বিচ্ছিন্ন অলৌকিক রহস্যময় ঘটনা এখাণে সমান্তরালে চলছে। ঘটনার sequence গুলিকে তিনি এমন ভাবে পরিবেশন করেছেন যা পাঠকদের climax পর্যন্ত আটকে রাখতে সক্ষম।বইটার কোন অংশ আমার boaring বা অপ্রয়োজনীয় লাগেনি। কাহিনীর চরিত্র গুলিও যথাযথ সময়ে রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হয়ে নিজেদের ভূমিকা সঠিক ভাবে পালন করেছেন। কোন অবাঞ্ছিত চরিত্র আমার চোখে পড়েনি।গোয়েন্দা কাহিনীর ন্যায় deduction এর দ্বারা দুটি পৃথক রহস্যের সমাপতন ঘটিয়ে অভীক বাবু যেভাবে climax এর দিকে অগ্রসর হয়েছেন তা সত্যি কাবিল এ তারিফ। Main course এর পর ভাল dessert যেমন খাবারের পরিপূর্ণতা দান করে KAURIBURIR MANDIR এর climax টি ও পাঠকের তৃপ্তি চরিথার্থ করতে সমর্থ। রোমাঞ্চ, adventure, horror এ পরিপূর্ণ রোমহর্ষক climax টি cinema কে ও হার মানায় আর পাঠকের কাঙ্খিত adrenaline rush দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। অন্যান্য AVIK SARKAR AUDIO STORIES এর মত KAURIBURIR MANDIR এর AUDIO STORY বানালে বেশ জমবে কিন্তু।

     আমার rating- ★ 1/2 / 

Conclusion/ পরিশেষে,

    KAURIBURIR MANDIR আমার AVIK SARKAR এর আগমবাগীশ series এর মধ্যে দ্বিতীয় সব থেকে ভাল লাগা গল্প, প্রথমে অবশ্যই আমি রাখি এবং ইনকুইজিশণ (EBONG INQUISITION BY AVIK SARKAR) কে।তন্ত্র, horror, thrill, রহস্য, ঈর্ষা,adventure, emotion এ পরিপূর্ণ গল্পটি একটি পরিপূর্ণ package। তাই পাঠকদের আমি অবশ্যই recommend করবো বইটি পড়ার জন্য।

আরও পড়ুন,
    সহজিয়া বৌদ্ধধর্মের তন্ত্র উপাসক একটি বিশেষ শাখার আরাধ্য এক ভয়ানক দেবতা চক্রসম্বর। সেই দেবতার নামে উৎসর্গ একটা প্রাচীন পুঁথি, নাম চক্রসম্বরের পুঁথি। সেই পুঁথিতে নাকি আছে মৃত আত্মা কে জাগানোর মত নানা রহস্যজনক গুপ্ত বিদ্যা।  বৌদ্ধধর্মের ঐ বিশেষ শাখার কাছে অতি পবিত্র সেই পুঁথিটাকে যুগ যুগ ধরে রক্ষা করে আসছে আটজন specially trained commando গোছের লোক, 'অষ্টমহাসিদ্ধ'। ঘটনাচক্রে সেই পুঁথি এসে পড়ে নরনারায়ন ভট্টাচার্যের হাতে আর তারপর থেকেই তার জীবনে ঘটতে থাকে একের পর এক বিপদ যাতে তার প্রান পর্যন্ত বিপন্ন হয়। বিপদ থেকে রক্ষা পেতে তিনি স্মরনাপন্ন হন দুই adventure প্রিয় তরুন তাপস আর সুবোধের। এই বিপদের হাত থেকে কি তাপসরা রক্ষা করতে পারবে তাদের প্রিয় নারান জেঠুকে? AVIK SARKAR এর কিশোর গোয়েন্দা উপন্যাস CHAKRASAMBARER PUNTHI এর পাঠপ্রতিক্রিয়া আমার BOOKS REVIEWS BLOG এ পড়তে এখানে click করুন।